Skip to main content

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Bibhutibhushan Bandyopadhyay

 বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Bibhutibhushan Bandyopadhyay
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

জার কথা শুনতে ও মজার জিনিস দেখতে কে বা চাই না? সকলেই চাই মনের মাঝে আনন্দ। আর মনের মাঝে আনন্দের সাগর এনে দেওয়ার ভূমিকা বহুকাল আগে থেকেই পালন করে আসছে সাহিত্য, উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- গল্প, নাটক, উপন্যাস এছাড়াও অনেক সাহিত্যের উপাদান রয়েছে যেগুলি এই ভূমিকা পালন করে থাকে। আর সেগুলি আমাদের যারা উপহার প্রদান করে থাকেন, তাঁদের বলা হয় সাহিত্যিক। তাঁরা তাঁদের গভীর কল্পনা শক্তি ও প্রতিভার বলে সেগুলি রচনা করে থাকেন সাহিত্য প্রেমী বাঙালীদের জন্য। 

আমাদের দেশ ভারতবর্ষে বহু প্রতিভাবান সাহিত্যিকের জন্ম হয়েছে। এই বিশেষ পোস্টটিতে একজন জনপ্রিয় ভারতীয় কথা সাহিত্যিক সম্পর্কে জানব তিনি হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভূতিভূষণ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার মুরাতিপুর গ্রামে মামার বাড়িতে। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বনগাঁ'র নিকটবর্তী বারাক পুর গ্রামে। বিভূতিভূষণের পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন বিখ্যাত সংস্কৃত পন্ডিত। তিনি এই পান্ডিত্যের জন্য শাস্ত্রী উপাধি পেয়েছিলেন। বিভূতিভূষণের মাতা হলেন মৃণালিনী দেবী।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন স্কুলের শিক্ষক অর্থাৎ তিনি শিক্ষকতার মধ্যে দিয়ে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। সেদিন থেকে ভাবলে সত্যই আমাদের অবাক হতে হয় যে তিনি সারাজীবন স্কুল মাস্টারি করে বাংলা উপন্যাসে অদ্ভুত সিদ্ধিলাভ করেছেন। বিভূতিভূষণের খ্যাতি বাংলা উপন্যাসের পাশাপাশি বাংলা ছোট গল্পেও। বিভূতিভূষণের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি 'পথের পাঁচালী'। সেটি 'বিচিত্রা' পত্রিকায় প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই বহু কৌতুহলী পাঠক এটার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। আর এই গ্রন্থটি ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৯ সালে। পরে 'পথের পাঁচালী'র উত্তরকান্ড হিসেবে 'অপরাজিতা' উপন্যাসটি 'প্রবাসী' পত্রিকায় (১৩৩৬-৩৮) বহুদিন ধরে প্রকাশিত হয়েছে। বিভূতিভূষণের এই সুপ্রসিদ্ধ উপন্যাস গুলির রসাস্বাদন করে পাঠক ও সমালোচক অনুভব করতে পারেন যে বাংলা উপন্যাসের মহাকাশে এক নতুন নক্ষত্রের উদয় হয়েছে। এরপর বিভূতিভূষণ তাঁর অনেকগুলি স্নিগ্ধ মধুর ছোট গল্পের রচনার মাধ্যমে পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করেছেন। বাংলা সাহিত্যে তিনি এক বিচিত্র গল্পরস সৃষ্টি করতে পেরেছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রচনায় যে সমস্ত বালক, শিশু, যুবক, বৃদ্ধের ছবি এঁকেছেন তার মূল রস হল রূপকথার রস। পরিচিত বিবর্ণ দেশ কালের অন্তরে অপূর্ব কল্পলোকের রস বস্তু লুকিয়ে আছে। শিশুর মতো কৌতুহল এবং কবির মতো কল্পনার প্রলেপ দিয়ে বিভূতিভূষণ অনুকরণীয় ভাষায় এমন গ্রামীণ জীবনের চিত্র এঁকেছেন যে, চিত্র হিসেবে তা অনবদ্য এবং অতিক্রমণীয়। দুঃখ দারিদ্র্যের ছবি তিনি এঁকেছেন কিন্তু, সে ছবি কোনো সমাজ বা অর্থনীতি ঘটিত প্রখর প্রশ্ন উত্থাপন করেনা। কিছু কিছু প্রেমের চিত্রও এঁকেছেন কিন্তু তাতে রোমান্টিক ও বৈচিত্র্য ও উত্তপ্ত কামনার চেয়ে স্নিগ্ধ মধুর শান্ত ও গার্হস্থ রূপটি বেশি প্রকাশ পেয়েছে। বিভূতিভূষণের 'পথের পাঁচালী' উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রের রূপ দেন সত্যজিৎ রায়। এটি সকলের কাছে সেরা চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে। এই চলচ্চিত্র টি পরিচালনা করার জন্য সত্যজিৎ রায় বহু পুরস্কারে পুরস্কৃত হন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর 'ইছামতী' উপন্যাসের জন্য মৃত্যুর পর 'রবীন্দ্র পুরস্কার' লাভ করেন।  বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১লা নভেম্বর, ১৯৫০ সালে মৃত্যু বরণ করেন। 

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রন্থাবলীঃ

পন্যাসঃ 

  • পথের পাঁচালী (১৯২৯)
  • অপরাজিতা (১৯৩২)
  • দৃষ্টি প্রদীপ (১৯৩৫)
  • আরণ্যক (১৯৩৯)
  • আদর্শ হিন্দু হোটেল (১৯৪০)
  • বিপিনের সংসার (১৯৪১)
  • দেবযান (১৯৪৪)
  • কেদার রাজা (১৯৪৫)
  • অথৈজল (১৯৪৭)
  • ইছামতী (১৯৫০)
গল্প সংকলনঃ

  • মেঘমল্লার (১৯৩১)
  • মৌরিফুল (১৯৩২)
  • যাত্রা বদল (১৯৩৪)
  • কিন্নর দল (১৯৩৮)
  • তাল নবমী (১৯৪৪)
  • বিধু মাস্টার (১৯৪৫)
  • নবাগত (১৯৪৪)
  • অসাধারণ (১৯৪৬)
কিশোর পাঠ্যঃ

  • চাঁদের পাহাড় (১৯৩৮)
  • মরণের ডঙ্কাবাজে (১৯৪০)
  • মিসমিদের কবচ (১৯৪২)
  • হীরা মানিক জ্বলে (১৯৪৬)
ভ্রমণ কাহিনী ও দিনলিপিঃ

  • অভিযাত্রিক (১৯৪০)
  • স্মৃতির রেখা (১৯৪১)
  • তৃণাঙ্কুর (১৯৪৩)
  • উর্মিমুখর (১৯৪৪)
  • বনে পাহাড় (১৯৪৫)
  • উৎকর্ণ (১৯৪৬)
  • হে অরণ্য কথা কও (১৯৪৮)

Comments

Popular posts from this blog

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc      শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য 1. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কবে আবিষ্কার করেন ? উঃ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে। 2. কাব্যটি কোথা থেকে আবিস্কার করা হয় ? উঃ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে শ্রীনিবাস আচার্যের বংশধর দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে । 3. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কখন লিখেছেন? উঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি বড়ু চণ্ডীদাস চতুর্দশ শতকের প্রথমার্ধে লিখেছেন । 4. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কোথা থেকে কত সালে প্রকাশিত হয় ?  উঃ ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় । 5. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটির প্রকৃত নাম কী ছিল ? উঃ শ্রীকৃষ্ণ সন্দর্ভ । 6. বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্যে কিসের কিসের প্রভাব আছে? উঃ ভাগবত,পুরাণ ও জয়দেবের গীতগোবিন্দের । 7. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কয়টি খন্ড রয়েছে? উঃ ১৩ টি । 8. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খন্ড গুলির নাম উল্লেখ করুন? উঃ জন্ম খন্ড , তাম্বুল খন্ড , দান খন্ড, নৌকা খন্ড , ভার খন্ড , ছত্র

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | কাশীরাম দাস প্রশ্ন উত্তর

  বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস   Q.1 অন্নদামঙ্গল কার লেখা?  Or অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কে? উঃ ভারতচন্দ্র রায়। Q.2 ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। Q.3 ভারতচন্দ্র কোন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি?  উঃ ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি।  Q.4 কঙ্কাবতী উপন্যাস কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী উপন্যাস ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর লেখা।  Q.5 কঙ্কাবতী কাব্যটি কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী কাব্যটি বুদ্ধদেব বসুর লেখা।  Q.6 কাফি খাঁ কার ছদ্মনাম?  উঃ কাফি খাঁ প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ীর ছদ্মনাম।  Q.7 বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো যাযাবর। Q.8 সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুবচনী।  Q.9 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুনন্দ। Q.10 সত্যপীর কার ছদ্মনাম? উঃ সত্যপীর সৈয়দ মুজতবা আলীর ছদ্মনাম।  Q.11 নীহারিকা দেবী কার ছদ্মনাম?  উঃ নীহারিকা দেবী অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ছদ্মনাম।  Q.12 নীলকন্ঠ কার ছদ্মনাম?  উঃ প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম নীলকন্ঠ।  Q.13 অনিলা দেবী

শাক্ত পদাবলী | বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc |

শাক্ত পদাবলী    1. শাক্ত পদাবলী কী?  উঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে দেবী কালিকা বা  শ্যামার আরাধনা বিষয়ক যে সমস্ত পদ  রচিত  হয়েছিল তা-ই শাক্ত পদাবলী নামে পরিচিত। 2. শাক্ত পদাবলীকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?  উঃ (ক) আগমনী (খ) বিজয়া (গ) ভক্তের  আকুতি।  3. শক্তি ধর্ম বিষয়ক প্রাচীনতম পরিচয়  কোথায় পাওয়া  যায় ?  উঃ ঋগ্বেদের দেবীশুক্তে ।  4. শাক্ত পদের আরেক নাম কী ?  উঃ 'মালসী'। এই গান গুলি মালবশ্রী রাগে গাওয়া হত তাই এরূপ নামকরন ।  5. শাক্ত পদাবলীর শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে?  উঃ রাম প্রসাদ সেন ।  6. রাম প্রসাদ সেনের পরিচয় দাও?  উঃ ঈশ্বর গুপ্তের তথ্য অনুসারে রাম  প্রসাদের জন্ম ১৭২০-১৭২১ খ্রিস্টাব্দ  এবং ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেহ ত্যাগ করেন। তাঁর জন্ম হালি শহরের অন্তর্গত কুমার হট্ট গ্রামে।  7. কবি রাম প্রসাদ সেনের প্রথম গান কী?  উঃ "আমায় দাও মা তবিলদারি" 8. কবি রাম প্রসাদ সেনের পিতার নাম কী? উঃ রাম রাম সেন।  9. কবি রাম প্রসাদ সেনকে কবিরঞ্জন উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র।  10. কবি রাম প্রসাদ সেন আর কোন কোন কাব্য রচনা করেন?  উঃ 'বিদ্যাসুন্দর','কালীকীর্তন','কৃষ্ণকী