Skip to main content

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, Tarasankar Bandyopadhyay

Tarasankar Bandyopadhyay

 তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮-১৯৭১) এখন তিনি জীবিত নন, কিন্তু তিনি তাঁর সৃষ্টি কর্মের মধ্যে দিয়ে আমাদের মনের মধ্যে জীবিত রয়েছেন এবং তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন আমাদের মনে। বিংশ শতাব্দীর তিনি একজন সুপ্রতিষ্ঠিত কথা সাহিত্যিক তিনি তাঁর সাহিত্য কর্মজীবনে ৬৫ টি উপন্যাস, ৫৩টি গল্পগ্রন্থ, ১২ টি নাটক, ৪টি প্রবন্ধ গ্রন্থ, ১টি কাব্যগ্রন্থ ও ১টি প্রহসন রচনা করেছেন। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় 'কল্লোল' গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তিনি কিছু কবিতা রচনা করেছিলেন। পরে তিনি কথা সাহিত্যের পথে মনোনিবেশ করে কথা সাহিত্যের দ্বারা তিনি মানব জীবনের বিশাল রূপকে তিনি সকল মানুষের দৃষ্টিগোচর করেছেন। তাঁর উপন্যাসে সামন্ততান্ত্রিক ব্যক্তি, জীবন ও সমাজের চিত্রগুলি অপুর্ব করুণা ও মমতার সাথে বর্নিত হয়েছে। 

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, Tarasankar Bandyopadhyay
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

জন্মঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৯৮ সালের ২৩ জুুুুলাই পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তারাশঙ্করের পিতা ও মাতা হলেন হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রভাবতী দেবী। তারাশঙ্করের পিতা ও মাতা ছিলেন কালি ও তারা মায়ের ভক্ত তাই তাদের বাড়িতে নিয়মিত কালি ও তারা মায়ের পূজা হত। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের পূর্বে তারাশঙ্করের পিতা ও মাতার জৈষ্ঠ্য পুত্রের মৃত্যু হয়। পরে তাদের পরিবারে তারা মায়ের পূজো হবার দশ মাস পরে তারাশঙ্করের জন্ম হয়। তারাশঙ্করের পিতা ও মাতা মনে করেন তাঁদের পুত্র তারা মায়ের দয়া, তাই তাদের পুত্রের নামকরন করেন তারাশঙ্কর। 
শিক্ষা জীবনঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় লাভপুরের যাদবলাল হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তির্ন হয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন এবং এই সময় গান্ধীজীর দ্বারা অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয় ফলে তিনি এই অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন এবং এখানেই তাঁর শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। এই স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগদান করেছিলেন ফলে তিনি গ্রেফতার হন এবং পরে তিনি মুক্তি পেয়ে সাহিত্য জীবনে তিনি নিজেকে সমর্পণ করেন। 
তারাশঙ্করের সাহিত্যকর্মঃ
উপন্যাসঃ তারাশঙ্কর কতগুলি উপন্যাস রচনা করেছেন তা তোমরা আগেই জেনেছ। সেই সমস্ত উপন্যাস গুলির মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের নাম দেওয়া হলো-
  • রইকমল (১৯৩৫)
  • নীলকন্ঠ (১৯৩৩)
  • চৈতালি ঘূর্ণি (১৯৩২)
  • পাষাণ পুরী (১৯৩৩)
  • গণদেবতা (১৯৪৩)
  • ধাত্রী দেবতা (১৯৩৯)
  • পঞ্চগ্রাম (১৯৪৩)
  • মন্বন্তর (১৯৪৪)
  • হাঁসুলি বাঁকের উপকথা (১৯৫১)
  • নাগিনী কন্যার কাহিনী (১৯৫২)
  • ঝড় ও ঝরাপাতা (১৯৪৬)
  • আরোগ্য নিকেতন (১৯৫৩)
  • যোগভ্রষ্ট (১৯৬১)

ছোটগল্পঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু উল্লেখযোগ্য ছোটগল্পের নাম গুলি হলো-

  • ছলনাময়ী (১৯৩৭)
  • জলসাঘর (১৯৭৮)
  • রসকলি (১৯৪২)
  • তিনশূন্য (১৯৪২)
  • প্রতিধ্বনি (১৯৪৩)
  • যাদুকরী (১৯৪৪)
  • হারানো সুর (১৯৪৫)
নাটকঃ 

  • কালিন্দী (১৯৪২)
  • দুই পুরুষ (১৯৪৩)
  • পথের ডাক (১৯৪৩)
  • বিংশ শতাব্দী (১৯৪৫)
  • যুগ বিপ্লব (১৯৫১)
  • কবি (১৯৫৭)
  • কালরাত্রি (১৯৫৭)
  • আরোগ্য নিকেতন (১৯৬৮)
পুরস্কার ও উপাধিঃ  তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্যকর্ম জীবনে নানা পুরস্কার ও উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি 'শরৎস্মৃতি' পুরস্কার পান ও 'জগত্তারিণী স্মৃতি' পদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি 'আরোগ্য নিকেতন' রচনার জন্য 'রবীন্দ্র পুরস্কার' ও 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরস্কার পান। 'গনদেবতা' উপন্যাসের জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পান। তিনি পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন।

Comments

Popular posts from this blog

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc      শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য 1. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কবে আবিষ্কার করেন ? উঃ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে। 2. কাব্যটি কোথা থেকে আবিস্কার করা হয় ? উঃ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে শ্রীনিবাস আচার্যের বংশধর দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে । 3. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কখন লিখেছেন? উঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি বড়ু চণ্ডীদাস চতুর্দশ শতকের প্রথমার্ধে লিখেছেন । 4. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কোথা থেকে কত সালে প্রকাশিত হয় ?  উঃ ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় । 5. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটির প্রকৃত নাম কী ছিল ? উঃ শ্রীকৃষ্ণ সন্দর্ভ । 6. বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্যে কিসের কিসের প্রভাব আছে? উঃ ভাগবত,পুরাণ ও জয়দেবের গীতগোবিন্দের । 7. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কয়টি খন্ড রয়েছে? উঃ ১৩ টি । 8. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খন্ড গুলির নাম উল্লেখ করুন? উঃ জন্ম খন্ড , তাম্বুল খন্ড , দান খন্ড, নৌকা খন্ড , ভার খন্ড , ছত্র

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | কাশীরাম দাস প্রশ্ন উত্তর

  বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস   Q.1 অন্নদামঙ্গল কার লেখা?  Or অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কে? উঃ ভারতচন্দ্র রায়। Q.2 ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। Q.3 ভারতচন্দ্র কোন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি?  উঃ ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি।  Q.4 কঙ্কাবতী উপন্যাস কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী উপন্যাস ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর লেখা।  Q.5 কঙ্কাবতী কাব্যটি কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী কাব্যটি বুদ্ধদেব বসুর লেখা।  Q.6 কাফি খাঁ কার ছদ্মনাম?  উঃ কাফি খাঁ প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ীর ছদ্মনাম।  Q.7 বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো যাযাবর। Q.8 সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুবচনী।  Q.9 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুনন্দ। Q.10 সত্যপীর কার ছদ্মনাম? উঃ সত্যপীর সৈয়দ মুজতবা আলীর ছদ্মনাম।  Q.11 নীহারিকা দেবী কার ছদ্মনাম?  উঃ নীহারিকা দেবী অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ছদ্মনাম।  Q.12 নীলকন্ঠ কার ছদ্মনাম?  উঃ প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম নীলকন্ঠ।  Q.13 অনিলা দেবী

শাক্ত পদাবলী | বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc |

শাক্ত পদাবলী    1. শাক্ত পদাবলী কী?  উঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে দেবী কালিকা বা  শ্যামার আরাধনা বিষয়ক যে সমস্ত পদ  রচিত  হয়েছিল তা-ই শাক্ত পদাবলী নামে পরিচিত। 2. শাক্ত পদাবলীকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?  উঃ (ক) আগমনী (খ) বিজয়া (গ) ভক্তের  আকুতি।  3. শক্তি ধর্ম বিষয়ক প্রাচীনতম পরিচয়  কোথায় পাওয়া  যায় ?  উঃ ঋগ্বেদের দেবীশুক্তে ।  4. শাক্ত পদের আরেক নাম কী ?  উঃ 'মালসী'। এই গান গুলি মালবশ্রী রাগে গাওয়া হত তাই এরূপ নামকরন ।  5. শাক্ত পদাবলীর শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে?  উঃ রাম প্রসাদ সেন ।  6. রাম প্রসাদ সেনের পরিচয় দাও?  উঃ ঈশ্বর গুপ্তের তথ্য অনুসারে রাম  প্রসাদের জন্ম ১৭২০-১৭২১ খ্রিস্টাব্দ  এবং ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেহ ত্যাগ করেন। তাঁর জন্ম হালি শহরের অন্তর্গত কুমার হট্ট গ্রামে।  7. কবি রাম প্রসাদ সেনের প্রথম গান কী?  উঃ "আমায় দাও মা তবিলদারি" 8. কবি রাম প্রসাদ সেনের পিতার নাম কী? উঃ রাম রাম সেন।  9. কবি রাম প্রসাদ সেনকে কবিরঞ্জন উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র।  10. কবি রাম প্রসাদ সেন আর কোন কোন কাব্য রচনা করেন?  উঃ 'বিদ্যাসুন্দর','কালীকীর্তন','কৃষ্ণকী