Skip to main content

সাহিত্যের রূপ ও রীতি | Sahityer rupriti | wbssc slst bengali

 সাহিত্যের রূপ ও রীতি | Sahityer rupriti | wbssc slst bengali 

Bangla sahityer itihas, সাহিত্যের রূপ ও রীতি, wbssc 2022, slst bengali


১. মন্ময় কবিতা কাকে বলে? 

উঃ যে কবিতায় বস্তু জগৎ বা বাস্তব জগৎ নয় কবির নিজস্ব কল্পনার জগৎ, আবেগ, অনুভূতি প্রকাশ পায় তাকে মন্ময় কবিতা বলে।

বিহারীলালের  সারদা মঙ্গল, অক্ষয় কুমার বড়ালের এষা।

২. তন্ময় কবিতা কাকে বলে? 

উঃ যে কবিতায় কবির নিজস্ব কল্পনার জগৎ নয় বাস্তব জগৎ প্রাধান্য পায় অর্থাৎ বাস্তব জগৎ বা বস্তু জগৎ-ই যেখানে কবি প্রকাশ করে থাকেন তাকেই বলা হয় তন্ময় কবিতা। 

৩. সনেট কী? 

উঃ সনেট হল বিশেষ ছন্দরীতিতে রচিত ১৪ টি চরণে সংগঠিত কবিতা যার প্রতিটি চরণে ১৪ টি করে অক্ষর থাকবে। সনেটের প্রথম ৮ টি চরণের স্তবককে বলা হয় অষ্টক এবং পরবর্তী ৬ টি চরণের স্তবককে বলা হয় ষটক। অষ্টকে থাকে মূলত ভাবের প্রবর্তনা এবং ষটকে থাকে ভাবের পরিণতি। 

সনেটের আদি কবি হলেন পেত্রার্ক। আর বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। 

৪. ওড বা স্তোত্র কবিতা কাকে বলে? 

উঃ ওডের উৎওত্তি হয়েছে প্রাচীন গ্রীসে। প্রাচীন গ্রীসে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে যে বন্দনা মূলক বা স্তুতি মূলক গান গাওয়া হত তা-ই ওড। এই ওড পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা সাহিত্যে বহু ওড বা স্তোত্র কবিতা রচিত হয়েছে। যেমন - সুরেন্দ্র মজুমদারের মাতৃস্তুতি, অক্ষয় কুমার বড়ালের মানব বন্দনা, সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের নমস্কার, রবীন্দ্রনাথের বর্ষাশেষ, মোহিতলাল মজুমদারের নারী স্তোত্র, জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন।

ইংরেজি সাহিত্যেও আমরা ওড দেখতে পায় - টমাস গ্রের 'দ্য প্রোগ্রেস অব পোয়েজি', শেলির 'ওড টু দ্য ওয়েস্ট উইন্ড', কিটসের 'ওড টু দ্য নাইটিঙ্গল।

৫. শোক কবিতা বা এলিজি কাকে বলে? 

উঃ যে কবিতায় কবির ব্যক্তিগত শোক প্রকাশ পায় তাকে শোক কবিতা বা এলিজি বলে। 

এলিজির শ্রষ্টা হলেন মিল্টন। বাংলায় যে সব শোক কাব্য লেখা হয়েছে সেগুলি হল - বিহারীলাল চক্রবর্তীর 'বন্ধু বিয়োগ', গোবিন্দ দাসের 'বঙ্কিম বিদায়', রবীন্দ্রনাথের 'সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত', অক্ষয় কুমার বড়ালের 'এষা' ইত্যাদি। 

৬. ব্যালাড বা গাথা কবিতা কী?

উঃ ব্যালাড হল নৃত্য সহযোগে গান। এখানে কোনো একটি কাহিনী বা ঘটনাকে গানের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয়। 

বাংলার ব্যালাড বা গাথা কবিতা গুলি হল- ময়মনসিংহ গীতিকা, গোপীচান্দের গান।

৭. হাইকু কী?

উঃ হাইকু হল এক ধরনের কবিতা যেটি সংক্ষিপ্ত আকারে মাত্র তিনটি পঙক্তিতে রচিত হয়ে থাকে। হাইকু কবিতার জন্ম হয়েছিল জাপানে। রবীন্দ্রনাথের 'লেখন' এর ছোটো ছোটো কবিতাগুলি হাইকুর উদাহরণ। 

৮. রাখালিয়া কাব্য কী?

উঃ রাখালিয়া কাব্য হল এমন কাব্য যেখানে রাখাল তথা মেষ পালকের কথা পাওয়া যায়। যেখানে রাখালের জীবনের বেদনার প্রকাশ লক্ষ করা যায়।

৯. কাহিনী কবিতা কী? 

উঃ কাহিনী কবিতা অনেকাংশে গাথা কাব্যের মতোই। যে কবিতায় কোনো কাহিনী বা ঘটনাকে বর্ণনার উদ্দেশ্য রচিত হয় সেই কবিতা-ই হল কাহিনী কবিতা। অর্থাৎ যে কবিতার মূলে থাকে কোনো কাহিনীর বর্ণনা সেটাই হল কাহিনী কবিতা। 

১০. মহাকাব্য বা এপিক কাকে বলে? 

উঃ মহাকাব্য বা এপিক হল সুদীর্ঘ বীরগাথা যেখানে দেশ কিংবা সংস্কৃতির বীরত্ব গাথা ও ঘটনাক্রমের বিস্তৃত বিবরণ তুলে ধরা হয়।

১১. এপিকের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন?

উঃ সংস্কৃত আলংকারিক বিশ্বনাথ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ 'সাহিত্য দর্পণে' এপিক বা মহাকাব্যের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করেছেন। সেগুলি হল- 

i. মহাকাব্যের আখ্যান বস্তু হবে পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক। 

ii. মহাকাব্যের নায়ক হবেন ধীরোদাত্ত গুন সম্পন্ন।

iii. মহাকাব্য কমপক্ষে ৯ টি ও ৩০ টি সর্গে বিভক্ত হবে প্রতি সর্গের শেষে পরবর্তী সর্গের সূচনা থাকবে

iv. শৃঙ্গার, বীর ও শান্ত রসের একটি হবে প্রধান রস।

v. ভাষা হবে গাম্ভীর্য পূর্ণ।

১২. এপিক কয় প্রকার ও কী কী?

উঃ এপিক বা মহাকাব্য দুই প্রকার- i. Authentic epic

ii. Literary epic

বাল্মিকীর 'রামায়ন', ব্যাসদেবের 'মহাভারত', হোমারের ইলিয়াড ওডিসি এগুলো authentic epic.

মিল্টনের 'প্যারাডাইস লস্ট', মধুসূদন দত্তের 'মেঘনাদ বধ' কাব্য এগুলো হল literary epic.

১৩. মক এপিক কাকে বলে? 

উঃ কোনো তুচ্ছ বা হাস্যকর বিষয় নিয়ে প্রাচীন মহাকাব্যের রীতি পদ্ধতি অবলম্বনে বিদ্রুপাত্মক কাব্য রচিত হলে তাকে মক এপিক বলে।

মক এপিকের উদাহরণ - জগদ্বন্ধু ভদ্রের 'ছুছুন্দরী বধ কাব্য', ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ভারত উদ্ধার'।

১৪. স্যাটায়ারিক বা ব্যঙ্গ কবিতা কাকে বলে? 

উঃ যে কবিতায় কোনো ব্যক্তি বিশেষ এর আচার আচরণ, সামাজিক রীতি নীতিকে ব্যঙ্গ করা হয় তাকে স্যাটায়ারিক বা ব্যঙ্গ কবিতা বলে।

১৫. স্যাটায়ার (ব্যঙ্গ কবিতা) শব্দটির উৎস কী?

উঃ স্যাটায়ার শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ 'satira' থেকে। যার অর্থ হল হাসি কান্না মিশ্রিত কৌতুক।  

Comments

Popular posts from this blog

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc      শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য 1. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কবে আবিষ্কার করেন ? উঃ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে। 2. কাব্যটি কোথা থেকে আবিস্কার করা হয় ? উঃ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে শ্রীনিবাস আচার্যের বংশধর দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে । 3. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কখন লিখেছেন? উঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি বড়ু চণ্ডীদাস চতুর্দশ শতকের প্রথমার্ধে লিখেছেন । 4. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কোথা থেকে কত সালে প্রকাশিত হয় ?  উঃ ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় । 5. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটির প্রকৃত নাম কী ছিল ? উঃ শ্রীকৃষ্ণ সন্দর্ভ । 6. বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্যে কিসের কিসের প্রভাব আছে? উঃ ভাগবত,পুরাণ ও জয়দেবের গীতগোবিন্দের । 7. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কয়টি খন্ড রয়েছে? উঃ ১৩ টি । 8. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খন্ড গুলির নাম উল্লেখ করুন? উঃ জন্ম খন্ড , তাম্বুল খন্ড , দান খন্ড, নৌকা খন্...

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | কাশীরাম দাস প্রশ্ন উত্তর

  বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস   Q.1 অন্নদামঙ্গল কার লেখা?  Or অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কে? উঃ ভারতচন্দ্র রায়। Q.2 ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। Q.3 ভারতচন্দ্র কোন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি?  উঃ ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি।  Q.4 কঙ্কাবতী উপন্যাস কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী উপন্যাস ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর লেখা।  Q.5 কঙ্কাবতী কাব্যটি কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী কাব্যটি বুদ্ধদেব বসুর লেখা।  Q.6 কাফি খাঁ কার ছদ্মনাম?  উঃ কাফি খাঁ প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ীর ছদ্মনাম।  Q.7 বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো যাযাবর। Q.8 সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুবচনী।  Q.9 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুনন্দ। Q.10 সত্যপীর কার ছদ্মনাম? উঃ সত্যপীর সৈয়দ মুজতবা আলীর ছদ্মনাম।  Q.11 নীহারিকা দেবী কার ছদ্মনাম?  উঃ নীহারিকা দেবী অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ছদ্মনাম।...

শাক্ত পদাবলী | বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc |

শাক্ত পদাবলী    1. শাক্ত পদাবলী কী?  উঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে দেবী কালিকা বা  শ্যামার আরাধনা বিষয়ক যে সমস্ত পদ  রচিত  হয়েছিল তা-ই শাক্ত পদাবলী নামে পরিচিত। 2. শাক্ত পদাবলীকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?  উঃ (ক) আগমনী (খ) বিজয়া (গ) ভক্তের  আকুতি।  3. শক্তি ধর্ম বিষয়ক প্রাচীনতম পরিচয়  কোথায় পাওয়া  যায় ?  উঃ ঋগ্বেদের দেবীশুক্তে ।  4. শাক্ত পদের আরেক নাম কী ?  উঃ 'মালসী'। এই গান গুলি মালবশ্রী রাগে গাওয়া হত তাই এরূপ নামকরন ।  5. শাক্ত পদাবলীর শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে?  উঃ রাম প্রসাদ সেন ।  6. রাম প্রসাদ সেনের পরিচয় দাও?  উঃ ঈশ্বর গুপ্তের তথ্য অনুসারে রাম  প্রসাদের জন্ম ১৭২০-১৭২১ খ্রিস্টাব্দ  এবং ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেহ ত্যাগ করেন। তাঁর জন্ম হালি শহরের অন্তর্গত কুমার হট্ট গ্রামে।  7. কবি রাম প্রসাদ সেনের প্রথম গান কী?  উঃ "আমায় দাও মা তবিলদারি" 8. কবি রাম প্রসাদ সেনের পিতার নাম কী? উঃ রাম রাম সেন।  9. কবি রাম প্রসাদ সেনকে কবিরঞ্জন উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র।  10. কবি রা...