Skip to main content

সাহিত্যের রূপ ও রীতি পর্ব - ৪, sahityer rup o riti

 সাহিত্যের রূপ ও রীতি পর্ব - ৪, sahityer rup o riti 


1. উপন্যাস কী?

উঃ উপন্যাস হলো গদ্যে রচিত বৃহদাকার বর্ণনাত্মক কথা সাহিত্য। এটি সাহিত্যের অন্যান্য শাখার মতই একটি বিশেষ শাখা। উপন্যাসের মধ্যে দিয়েই সামাজিক জীবনের বাস্তবতার চিত্র পরিলক্ষিত হয়।

2. উপন্যাসকে নির্দিষ্ট আয়তনের গদ্য কাহিনী কে বলেছেন? তাঁর মতে উপন্যাসের আয়তন কত হওয়া উচিত? 

উঃ উপন্যাসকে নির্দিষ্ট আয়তনের গদ্য কাহিনী বলেছেন E.M Forstar, তাঁর মতে, কমপক্ষে ৫০ হাজার শব্দ নিয়ে উপন্যাস রচিত হওয়া উচিত। 

3. একটি সার্থক উপন্যাস রচনার মূল উপাদান গুলি কী কী? 

উঃ প্লট বা আখ্যান, চরিত্র, সংলাপ, পরিবেশ বর্ণনা, শৈলী, লেখকের সামগ্রিক জীবন দর্শন। 

4. উপন্যাসকে কথা সাহিত্য বলা হয় কেন?

উঃ কথা সাহিত্য বলতে গল্প কাহিনিকে বোঝানো হয়ে থাকে যা সাহিত্যিক শব্দ বা কথার দ্বারা শৈল্পিক আঙ্গিকে রচনা করে থাকেন। এই গল্প কাহিনী বা প্লট উপন্যাসের মূল উপাদান, তাই সহজেই আমরা উপন্যাসকে কথা সাহিত্য বলতে পারি। 

5. উপন্যাস কত রকমের হতে পারে? সেগুলো উল্লেখ করুন? 

উঃ সামাজিক উপন্যাস, ঐতিহাসিক উপন্যাস, রাজনৈতিক উপন্যাস, মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস, কাব্যধর্মী উপন্যাস, গোয়েন্দা উপন্যাস, পত্রোপন্যাস, হাস্যরসাত্মক উপন্যাস, আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস, আঞ্চলিক উপন্যাস, রহস্য উপন্যাস, রূপক উপন্যাস, চেতনা প্রবাহ রীতির উপন্যাস, রোমান্স উপন্যাস, পুরাণ কাহিনীমূলক উপন্যাস, বীরত্বব্যঞ্জক উপন্যাস। 

6. সামাজিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাসে সমাজের নানা অন্যায় অবিচার, কুসংস্কার, নানা সামাজিক সমস্যার উদঘাটন এবং তাদের সমালোচনার মাধ্যমে সংস্কারের কথা বলা হয়, তাকে সামাজিক উপন্যাস বলে।

সামাজিক উপন্যাসের উদাহরণ - শরৎচন্দ্রের 'অরক্ষণীয়া', 'পল্লীসমাজ', বঙ্কিমচন্দ্রের 'বিষবৃক্ষ', 'কৃষ্ণকান্তের উইল'  তারাশঙ্করের 'গণদেবতা', 'পঞ্চগ্রাম'। 

7. ঐতিহাসিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাস কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা বা কোনো ঐতিহাসিক চরিত্র অবলম্বনে রচিত হয়, তাকে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে।

ঐতিহাসিক উপন্যাসের উদাহরণ - বঙ্কিমচন্দ্রের 'রাজসিংহ', রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ধর্মপাল', রমেশচন্দ্র দত্তের 'বঙ্গবিজেতা', 'মহারাষ্ট্র জীবনপ্রভাত'। 

8. রাজনৈতিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাস কোনো রাজনৈতিক ঘটনাবলি, রাজনৈতিক মতাদর্শ, রাজনৈতিক সংকট, ও রাজনৈতিক চরিত্রের কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যে উপন্যাস রচিত হয়, তাকে রাজনৈতিক উপন্যাস বলা হয়। 

রাজনৈতিক উপন্যাসের উদাহরণ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গোরা', শরৎচন্দ্রের 'পথের দাবী', সতীনাথ ভাদুড়ির 'জাগরী' ও 'ঢোড়াই চরিত মানস'। 

9. মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাসে লেখক ব্যক্তির মনোজগতের ঘাত সংঘাত ও ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার উপর জোর দেন এবং চরিত্রের অন্তর্জগতের জটিল রহস্য উন্মোচন করে থাকেন তাকে বলা হয় মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। 

মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের উদাহরণ - রবীন্দ্রনাথের 'চোখের বালী'।

10. কাব্যধর্মী উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাসে লেখকের জীবন দর্শন ও গীতধর্মিতা, ভাষার কাব্য মধুর্য প্রাধান্য পায় তাকে কাব্যধর্মী উপন্যাস বলে। 

উদাহরণ - রবীন্দ্রনাথের 'শেষের কবিতা', মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'দিবারাত্রির কাব্য'।

11. পত্রোপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাসের বক্তব্য পত্রের আকারে প্রকাশ করা হয় তাকেই পত্রোপন্যাস বলে।

উদাহরণ - শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের 'ক্রৌঞ্চ মিথুন', বুদ্ধদেব বসুর 'সবিনয় নিবেদন' ইত্যাদি। 

12. আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাসে লেখক তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাত অত্যন্ত শিল্প কুশলতায় প্রকাশ করে থাকেন, তাকে আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বলে। 

উদাহরণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'শ্রীকান্ত', বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ' 'পথের পাঁচালী'।

13. আঞ্চলিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ যে উপন্যাস বিশেষ কোনো অঞ্চল বা বিশেষ কোনো অঞ্চলের নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না  মিশ্রিত করে যে উপন্যাস রচিত হয় তাকে আঞ্চলিক উপন্যাস বলে। 

যেমন- ধাত্রীদেবতা, হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, পদ্মানদীর মাঝি, তিতাস একটি নদীর নাম।

14. চেতনা প্রবাহ রীতির উপন্যাস কাকে বলে? 

উঃ জটিল মানবমনের অন্তরের গভীর রহস্য উন্মোচন করা যে উপন্যাসের মূখ্য বিষয় তাকে চেতনা প্রবাহ রীতির উপন্যাস বলে। 

উদাহরণ- বুদ্ধদেব বসুর 'লাল মেঘ', গোপাল হালদারের 'একদা'।

সাহিত্যের রূপ ও রীতি, sahityer rup o riti bangla, wbssc slst bengali


Comments

Popular posts from this blog

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য | sri krishna kirtan | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর |বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc      শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য 1. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কবে আবিষ্কার করেন ? উঃ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে। 2. কাব্যটি কোথা থেকে আবিস্কার করা হয় ? উঃ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে শ্রীনিবাস আচার্যের বংশধর দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে । 3. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে কখন লিখেছেন? উঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি বড়ু চণ্ডীদাস চতুর্দশ শতকের প্রথমার্ধে লিখেছেন । 4. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কোথা থেকে কত সালে প্রকাশিত হয় ?  উঃ ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় । 5. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটির প্রকৃত নাম কী ছিল ? উঃ শ্রীকৃষ্ণ সন্দর্ভ । 6. বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্যে কিসের কিসের প্রভাব আছে? উঃ ভাগবত,পুরাণ ও জয়দেবের গীতগোবিন্দের । 7. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কয়টি খন্ড রয়েছে? উঃ ১৩ টি । 8. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খন্ড গুলির নাম উল্লেখ করুন? উঃ জন্ম খন্ড , তাম্বুল খন্ড , দান খন্ড, নৌকা খন্ড , ভার খন্ড , ছত্র

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | কাশীরাম দাস প্রশ্ন উত্তর

  বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস   Q.1 অন্নদামঙ্গল কার লেখা?  Or অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কে? উঃ ভারতচন্দ্র রায়। Q.2 ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। Q.3 ভারতচন্দ্র কোন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি?  উঃ ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি।  Q.4 কঙ্কাবতী উপন্যাস কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী উপন্যাস ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর লেখা।  Q.5 কঙ্কাবতী কাব্যটি কার লেখা?  উঃ কঙ্কাবতী কাব্যটি বুদ্ধদেব বসুর লেখা।  Q.6 কাফি খাঁ কার ছদ্মনাম?  উঃ কাফি খাঁ প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ীর ছদ্মনাম।  Q.7 বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো যাযাবর। Q.8 সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুবচনী।  Q.9 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম কি?  উঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হলো সুনন্দ। Q.10 সত্যপীর কার ছদ্মনাম? উঃ সত্যপীর সৈয়দ মুজতবা আলীর ছদ্মনাম।  Q.11 নীহারিকা দেবী কার ছদ্মনাম?  উঃ নীহারিকা দেবী অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ছদ্মনাম।  Q.12 নীলকন্ঠ কার ছদ্মনাম?  উঃ প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম নীলকন্ঠ।  Q.13 অনিলা দেবী

শাক্ত পদাবলী | বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস | wbssc |

শাক্ত পদাবলী    1. শাক্ত পদাবলী কী?  উঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে দেবী কালিকা বা  শ্যামার আরাধনা বিষয়ক যে সমস্ত পদ  রচিত  হয়েছিল তা-ই শাক্ত পদাবলী নামে পরিচিত। 2. শাক্ত পদাবলীকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?  উঃ (ক) আগমনী (খ) বিজয়া (গ) ভক্তের  আকুতি।  3. শক্তি ধর্ম বিষয়ক প্রাচীনতম পরিচয়  কোথায় পাওয়া  যায় ?  উঃ ঋগ্বেদের দেবীশুক্তে ।  4. শাক্ত পদের আরেক নাম কী ?  উঃ 'মালসী'। এই গান গুলি মালবশ্রী রাগে গাওয়া হত তাই এরূপ নামকরন ।  5. শাক্ত পদাবলীর শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে?  উঃ রাম প্রসাদ সেন ।  6. রাম প্রসাদ সেনের পরিচয় দাও?  উঃ ঈশ্বর গুপ্তের তথ্য অনুসারে রাম  প্রসাদের জন্ম ১৭২০-১৭২১ খ্রিস্টাব্দ  এবং ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেহ ত্যাগ করেন। তাঁর জন্ম হালি শহরের অন্তর্গত কুমার হট্ট গ্রামে।  7. কবি রাম প্রসাদ সেনের প্রথম গান কী?  উঃ "আমায় দাও মা তবিলদারি" 8. কবি রাম প্রসাদ সেনের পিতার নাম কী? উঃ রাম রাম সেন।  9. কবি রাম প্রসাদ সেনকে কবিরঞ্জন উপাধি কে প্রদান করেন? উঃ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র।  10. কবি রাম প্রসাদ সেন আর কোন কোন কাব্য রচনা করেন?  উঃ 'বিদ্যাসুন্দর','কালীকীর্তন','কৃষ্ণকী