অনুবাদ সাহিত্য
1. রামায়ণের আদি কবি কে?
উঃ বাল্মীকি।
2. বাল্মিকী রামায়ণ কয়টি কান্ডে বিভক্ত
ও কয়টি শ্লোকে রচিত?
উঃ সপ্তকান্ডে বিভক্ত - বালকান্ড,অযোদ্ধা
কান্ড, অরণ্যকান্ড, কিষ্কিন্ধ্যাকান্ড, সুন্দর
কান্ড,লঙ্কাকান্ড ও উত্তরকান্ড।২৪০০০
শ্লোকে রচিত।
3. বাল্মিকী রামায়ণের রচনাকাল কত?
উঃ বাল্মিকী রামায়ণের রচনা কাল নিয়ে
নানা বিতর্ক আছে শুধু এটুকু বলা যায় যে
৬৬০ খ্রীস্টপূর্বাব্দের পরে রচিত শতপথ
ব্রাহ্মণে চ্যবণ নামে যে মুনির কথা আছে
তিনি নাকি আদি রচনাকার হিসাবে রামায়ণ
রচনার চেষ্টা করেন। অশ্বঘোষ তাঁর "বুদ্ধচরিতে"
(খ্রী. ১ম অব্দে) এই বিষয়ে ধারণা দেন যে চ্যবন
রামায়ণ রচনায় ব্যর্থ হলে তাঁর বংশধর বাল্মিকী
এই মহাকাব্যটি রচনা করেন।
4. 'রামচরিতমানস' কে রচনা করেন?
উঃ তুলসীদাস।
5. রামায়ণের আদিতম পরিচয় কোথায়
পাওয়া যায়?
উঃ পালি ভাষায় রচিত 'দশরথ জাতকে'র
তেরোটি 'গাথায়'।
6. বাল্মিকী 'রামায়ণের' বাংলায় ভাবানুবাদ
কে করেন?
উঃ কবি কৃত্তিবাস ওঝা।
7. বাংলা অনুবাদ সাহিত্যের আদি কবি
কাকে বলা হয়?
উঃ কৃত্তিবাসকে।
8. কবি কৃত্তিবাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন?
উঃ রামায়ণ অনুবাদক কৃত্তিবাস ওঝা চতুর্দশ
শতকের শেষের দিকে আনুমানিক ১৩৮৬-
১৩৯৮ খ্রি. জন্মগ্রহণ করেন নদীয়ার ফুলিয়া
গ্রামে। পিতার নাম বনমালী ওঝা, মাতার
নাম মালিণী দেবী। কবি কৃত্তিবাসের জন্ম
কাল উল্লিখিত শ্লোক টি হল-
'আদিত্যবার শ্রী পঞ্চমী পূর্ণ মাঘ মাস'
তথি মধ্যে জন্ম লইলাম কৃত্তিবাস'
শ্লোক থেকে বোঝা যায় কোনো এক মাঘ
মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে রবিবারে কবি
জন্মেছেন।
9. কবি কৃত্তিবাসের কাব্যের নাম কী
কাব্যটির রচনা কাল কত?
উঃ কবি কৃত্তিবাস ওঝার কাব্যের নাম হল
'শ্রীরাম পাঁচালী'। কাব্যটির রচনা কাল
আনুমানিক ১৪১৮ খ্রিস্টাব্দ।
10. কৃত্তিবাসী রামায়ণের মুদ্রণ কবে ও
কোথা থেকে হয়?
উঃ ১৮০২-১৮০৩ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে উইলিয়াম
কেরীর উদ্যোগে শ্রীরামপুর মিশন থেকে।
11. কবি কৃত্তিবাস ওঝা তাঁর কাব্যে মুল রামায়ণের
কোন কোন অংশ বর্জন করেছেন?
উঃ কৃত্তিবাস বাল্মিকীর যে কাহিনী গুলি
বর্জন করেছেন সেগুলি হল -
কার্তিকের জন্ম, বশিষ্ট-বিশ্বামিত্র
বিরোধ, বিশ্বামিত্র কথা, অম্বরীশ যজ্ঞ, রামচন্দ্র
কর্তৃক আদিত্য-হৃদয় স্তব পাঠ।
12. কবি কৃত্তিবাস তাঁর কাব্য কল্পনা বলে
কোন কোন অংশ সংযোজন করেছেন?
উঃ কবি কৃত্তিবাস তাঁর কাব্য কল্পনা
বলে যে যে অংশ সংযোজন করেছেন
সেগুলি হল- সৌদাস-দিলীপ-রঘুর কাহিনী,
দশরথের রাজ্যে শনির দৃষ্টি, গণেশের জন্ম,
সম্বরাসুর বধ, কৈকেয়ীর বর লাভ, হনুমান কতৃক
সূর্যকে কক্ষতলে ধারণ, বীরবাহুর যুদ্ধ, তরণী
সেন বৃত্তান্ত।
13. কৃত্তিবাসের কাব্যে কতগুলি কান্ড
রয়েছে? তাঁর কাব্যে কতগুলি শ্লোক রয়েছে?
উঃ ৭টি কান্ড রয়েছে, সেগুলি হল- আদি,
অযোধ্যা, কিষ্কিন্ধ্যা, সুন্দর, লঙ্কা ও উত্তর।
কৃত্তিবাসের কাব্যের মোট শ্লোক রয়েছে -
২৪০০০ টি।
14. সংস্কৃত ভাষায় রচিত মহাভারতের আদি
কবি কে? তাঁর কাব্যের শ্লোক সংখ্যা কত?
উঃ কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদব্যাস। তাঁর কাব্যের
শ্লোক সংখ্যা ৮৮০০, পরবর্তীকালে নানা
ভাবে সংযোজিত হয়ে মহাভারতের শ্লোক
সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪০০০।
15. মহাভারত অনুবাদকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা
জনপ্রিয় কবি কে? তাঁর আবির্ভাব সম্বন্ধে
আলোচনা করুন?
উঃ কাশীরাম দাস।কবির আবির্ভাব ষোড়শ
শতকের দ্বিতীয়ার্ধে।জন্মস্থান বর্ধমানের কাটোয়ার নিকটবর্তী সিঙ্গি গ্রামে।
16. কাশীরাম দাসের 'মহাভারতের' রচনা
কাল কী?
উঃ ষোড়শ শতকের শেষ ভাগে।
17. কাশীরাম দাসের বংশ পরিচয় দিন?
উঃ কাশীরাম দাসের পিতা হলেন কমলাকান্ত
। কৃষ্ণরাম হল তিন ভাই এর মধ্যে একজন।
কাশীরামের দুই ভাই হল- কৃষ্ণরাম ও গদাধর।
কবির অনুজ গদাধরের পুত্রের নাম হল -
নন্দরাম দাস।
18. কবি কাশীরাম দাসের পৈতৃক উপাধি কী
ছিল?
উঃ দেব।
19. কাশীরাম দাসের গুরু কে?
উঃ অভিরাম। এই গুরুর উপদেশে কবি
মহাভারত পাঁচালী রচনায় প্রবৃত্ত হন।
20. কবি কাশীরাম দাস মহাভারতের কয়টি
পর্ব রচনা করেছেন?
উঃ কাশীরাম দাস সমগ্র মহাভারতের অনুবাদ
করেছিলেন কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের
মতভেদ ঘটেছে। কারন কাশীরামের কোনো
কোনো পুঁথিতে আছে যে, মহাভারতের আদি
পর্ব, সভা পর্ব, বন পর্ব, বিরাট পর্বের
খানিকটা রচনার পর তিনি স্বর্গারোহন করেন
। মৃত্যু কাল নিকটবর্তী দেখে কাশীরাম তাঁর
ভ্রাতুষ্পুত্র নন্দরামের ওপর অসমাপ্ত কাব্য
সম্পুর্ন করার ভার দেন।অবশ্য কবির কনিষ্ঠ
ভ্রাতা গদাধর ( নন্দরামের পিতা ) বলেছেন
যে, তাঁর অগ্রজ কাশীরাম গোটা মহাভারত
রচনা করেন।
21. কবিন্দ্র পরমেশ্বর কে ছিলেন?
উঃ কবিন্দ্র পরমেশ্বর ছিলেন ষোড়শ শতকের
একজন মহাভারত অনুবাদক। তাঁর প্রকৃত
নাম - পরমেশ্বর দাস।
22. কবি পরমেশ্বর দাসের উপাধি কী?
কে এই উপাধি প্রদান করেন?
উঃ কবিন্দ্র। পরাগল খান।
23. কবিন্দ্র পরমেশ্বর দাসের কাব্যের নাম
কী?
উঃ পান্ডব বিজয়। কাব্যটি মহাভারতের ১৮
টি পর্বের অনুবাদ। এটিকে বাংলায় লেখা
প্রথম মহাভারতের অনুবাদ মনে করা হয়।
24. শ্রীকর নন্দী কার পৃষ্ঠপোষকতায় কাব্য
রচনা করেন?
উঃ পরাগল খানের পুত্র ছুটি খানের পৃষ্ঠপোষ
-কতায় কাব্য রচনা করেন।
25. শ্রীকর নন্দীর কাব্যের উৎস কী? তাঁর
কাব্যের রচনা কাল কী?
উঃ জৈমিনি মহাভারতের অশ্বমেধ পর্ব।
আনুমানিক ১৫১৮ খ্রিস্টাব্দ।
26. ভাগবত অনুবাদক মালাধর বসুর
সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন?
উঃ কবি মালাধর বসুর আবির্ভাব কাল
পঞ্চদশ শতক। বর্ধমানের প্রসিদ্ধ কুলিন
গ্রামের বিখ্যাত কায়স্থ বংশে মালাধর বসুর
জন্ম। মালাধর বসুর পিতার নাম ভগিরথ ও
মাতার নাম ইন্দুমতী।
27. মালাধর বসুর কাব্যের নাম কী?
উঃ মালাধর বসুর কাব্যের নাম হল 'শ্রীকৃষ্ণ
বিজয়' বা 'গোবিন্দমঙ্গল' শ্রীকৃষ্ণবিজয়
অর্থে শ্রীকৃষ্ণের গৌরব কাহিনী বা শোভাযাত্রা
।
28. মালাধর বসুর কাবের রচনা কাল কী?
প্রাসঙ্গিক শ্লোকটি উল্লেখ করুন?
উঃ মালাধর বসুর 'শ্রীকৃষ্ণবিজয়' কাব্যটির
রচনা কাল আনুমানিক ১৪৭৩ - ১৪৮০ খ্রিঃ
' তেরশ পঁচানই শকে গ্রন্থ আরম্ভন।
চতুর্দশ দুই শকে হৈল সমাপন।।'
29. মালাধর বসুর কাব্যের প্রধান অবলম্বন
কী?
উঃ মালাধর বসুর কাব্যের প্রধান অবলম্বন
হল- ভাগবতের দশম ও একাদশ স্কন্দ।
30. মালাধর বসুর 'শ্রীকৃষ্ণবিজয়' গ্রন্থটি কার
সম্পাদনায় কখন প্রকাশিত হয়?
উঃ খগেন্দ্র নাথ মিত্রের সম্পাদনায় ১৯৪৪
খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
Comments
Post a Comment